Monday, April 2, 2018

হাতের লেখা সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলার দারুণ কিছু কৌশল

আতাহার আলী
সিনিয়র শিক্ষক, ধর্ম  ও নৈতিক শিক্ষা
 রায়হান স্কুল এন্ড কলেজ
আজিমপুর, ঢাকা

প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়ে এসে আমরা কম্পিউটার, মোবাইল আর ট্যাবলেট জাতীয় স্মার্ট  ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর কাছে কৃতজ্ঞ। এর অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা হল এখন ‘সুন্দর হাতের লেখা’ নিয়ে কিছুটা হলেও কম চিন্তা করতে হয় আমাদের।

তবে ‘সুন্দর হাতের লেখা’ বা ‘হাতের সুন্দর লেখা’ যাই বলি না কেন এখনও এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ছোটবেলায় আদর্শ লিপিতে আমরা পড়েছিলাম- ‘হস্তাক্ষর সুন্দর হইলে পরীক্ষায় অধিক নম্বর পাওয়া যায়’। শুধু তা-ই নয় সুন্দর হাতের লেখা আপনার ব্যক্তিত্বকে এক ভিন্ন মাত্রা দান করে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নামী-দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাতের লেখার ক্লাস নেন হাতের লেখা বিশেষজ্ঞ লরা হুপার। বিজনেস ইনসাইডারসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি হাতের লেখা ‍সুন্দর করার জন্য সাতটি পরামর্শ  দিয়েছেন।

এক) সঠিক উপাদান নির্ধারণ করা
লেখা শুরু করার আগে সেই জিনিসগুলো নির্বাচন করুন যেগুলো ব্যবহার করে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। অনেকেই মনে করে থাকেন সুন্দর হাতের লেখার জন্য ‘ফাউন্টেন পেন’ অত্যাবশ্যকীয়। আসলে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এমন একটি কলম বা পেন্সিল বেছে নিন যা আপনার আঙুলের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যাবে এবং লেখার সময় কাগজের ওপর যাকে জোরে চাপ দিতে হবে না। আর কাগজ হিসেবে নোটবুক জাতীয় লাইন টানা কাগজ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে শুরুতে পেনসিল এর পাশাপাশি জেল পেন ব্যবহার করা উত্তম।

দুই) হাত এবং কবজি নমনীয় করা
‘লেখা শুরুর আগে আমি আমার হাত হালকা করে নেই এবং কবজি দুটোকে হালকা মুচড়ে নেই যাতে এগুলো লেখার জন্য নমনীয় হয়’- হুপার বলেন। ‘বিশেষ করে যদি আপনি একটানা বেশ কয়েকদিন ধরে না লিখেন তাহলে অন্যান্য মাংসপেশীর মতো কবজি বা হাতেও একধরনের জড়তা অনুভব করবেন’। তাই মাঝে মধ্যে আমাদের কোন না কোন বিষয়ে টুকিটাকি লেখার অভ্যাস করা উচিৎ।

তিন) অঙ্গবিন্যাস ঠিক করা
সোজা হয়ে বসুন এবং আপনার অনভ্যস্ত হাতটিকে (যেমন ডানহাতিদের ক্ষেত্রে বাঁ হাত) কাগজ বা খাতাটিকে ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করুন। হুপার বলেন, ‘লেখার সময় আমি আমার অনভ্যস্ত হাতটিকে সামঞ্জস্য রক্ষার্থে  ব্যবহার করি। এটা আমাকে স্থির থাকতে এবং ডান হাতের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সাহায্য করে।’ তবে েএজন্য অবশ্যই চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করা উত্তম।

চার) কলম ধরা
কলম বা পেন্সিল নিব এর কাছাকাছি ধরে লিখুন, তবে শক্তভাবে ধরে নয়। যদি নিবের কাছাকাছি ধরে লিখতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন, তাহলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ কলম বা পেন্সির ধরার আসলে নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই। এটা সম্পূর্ণই আপনার হাতের গড়নের ওপর নির্ভর করে।

পাঁচ) বাহু এবং কবজির অবস্থান
বেশিরভাগ মানুষই লেখার সময় শুধু আঙুল ব্যবহার করে থাকেন। হস্তাক্ষরবিদরা আসলে আঙুল দিয়ে কলম-পেন্সিল আঁকড়ে ধরেন মাত্র এবং লেখার সময় নিজেদের বাহু এবং কবজিকে সমান অবস্থানে রেখে লিখে থাকেন। হুপার বলেন, ‘এটি রপ্ত করার জন্য আপনি একটি কলম ধরে কল্পানায় (বাতাসের ওপরে) বড় বড় অক্ষর লিখতে পারেন।’

ছয়) তুলনামূলক ধীরগতি অবলম্বন করা
বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে যত দ্রুত পারা যায় লেখা শেষ করার েএকটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। হুপার বলেন, ‘লেখা কোন দৌড় প্রতিযোগিতা নয়। কত দ্রুত তা শেষ করবেন এটাকে গুরুত্ব না দিয়ে প্রতিটি অক্ষর সুন্দর করবেন সেটাকে গুরুত্ব দিন। একটু ধীরে লিখুন এবং অক্ষরকে তার শ্রেষ্ঠ চেহারায় রূপ দিন।’ অক্ষরকে সুন্দর করে রূপ দিতে প্রথমে বড় বড় করে লেখার অভ্যাস করুন। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক লেখার স্টাইল ছোট আকারে হ্রাস করুন।

সাত) অনুশীলন, অনুশীলন এবং অনুশীলন
হাতের লেখা ভাল করার জন্য অনুশীলনের কোন বিকল্প নেই। উপরিউক্ত নিয়মগুলো মেনে আপনি যত বেশি অনুশীলন করবেন তত দ্রুতই আপনার দক্ষতা বাড়তে থাকবে। আবারো মনে করিয়ে দেই, হাতের লেখা সুন্দর করতে জ্ঞান লাভ করা এবং বার বার অনুশীলন করার কোন বিকল্প নেই।

(সংগৃহিত ও সংকলিত)

হাতের লেখা সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলার দারুণ কিছু কৌশল

আতাহার আলী সিনিয়র শিক্ষক, ধর্ম  ও নৈতিক শিক্ষা  রায়হান স্কুল এন্ড কলেজ আজিমপুর, ঢাকা প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়ে এসে আমরা কম্প...